الرئيسية تعرف على الإسلام أحكام الجار (بنغالي)

أحكام الجار (بنغالي)

Read Article
عرض المحتوى باللغة الأصلية

أحكام الجار (بنغالي)

اللغة: بنغالي
إعداد: আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান
نبذة مختصرة:
مقالة باللغة البنغالية، تتحدث عن: (1) الحكم في اهتمام الشرع بالجار، (2) مراتب الجار، (3) أهمية اختيار الجار، (4) حقوق الجار على جاره.

الوصف المفصل

    প্রতিবেশীর অধিকার

    আখতারুজ্জামান মুহাম্মাদ সুলাইমান

    সম্পাদনা : ড. মোহাম্মাদ মানজুরে ইলাহী

    أحكام الجار

    (باللغة البنغالية)

    أختر الزمان محمد سليمان

    مراجعة: د/ محمد منظور إلهي

    সংক্ষিপ্ত বর্ণনা.............

    প্রতিবেশীর অধিকার: বক্ষ্যমান প্রবন্ধে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে: (১) শরী‘আত প্রতিবেশীর গুরুত্ব দিল কেন? (২) প্রতিবেশীর স্তর, (৩) প্রতিবেশী নির্বাচনের গুরুত্ব, (৪) প্রতিবেশীর অধিকার। আশা করি শ্রোতা মাত্রই এর দ্বারা উপকৃত হবেন।

    প্রতিবেশীর অধিকার

    আল-হামদুলিল্লাহ ওয়াসসলাতু ওয়াসসালামু `আলা রাসূলিল্লাহ.....

    প্রতিবেশী মূলতঃ বাড়ির আশে পাশে বসবাসকারীকে বলা হয়। কখনো কখনো সফর অথবা কাজের সঙ্গীকে ও প্রতিবেশী বলা হয়। প্রতিবেশীই হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে নিকটজন, যিনি তার খবরা-খবর সম্পর্কে অন্যদের তুলনায় বেশি জানেন। ইসলামী শরী‘আত প্রতিবেশীর অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়েছে এবং তার অধিকারকে খুব বড় করে দেখেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    ﴿وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡ‍ٔٗاۖ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا وَبِذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡيَتَٰمَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱلۡجَارِ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡجَارِ ٱلۡجُنُبِ وَٱلصَّاحِبِ بِٱلۡجَنۢبِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِيلِ ﴾ [النساء: ٣٦]

    “উপাসনা করো আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং সদয় ব্যবহার কর নিকটাত্মীয়, এতীম- মিসকীন এবং আত্মীয়-সম্পর্কীয় প্রতিবেশী, আত্মীয়তা বিহীন প্রতিবেশী ও পার্শ্ববর্তী সহচরদের সাথে এবং অসহায় মুসাফিরের সাথে”[সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৬]

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «مَا زَالَ جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالْجَارِ، حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ»

    “জিবরীল ‘আলাইহিস সালাম আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে অনবরত অসীয়ত করছিলেন যে, এক পর্যায়ে আমার ধারণা হয়েছিল আল্লাহ তা‘আলা প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী করে দিবেন।”[1]

    শরী‘আত প্রতিবেশীকে এত অধিক গুরুত্ব দেওয়ার কারণ সম্ভবত এ হতে পারে:

    (১) যাতে করে মুসলিমদের মাঝে ভালোবাসা এবং মমত্ববোধের প্রসার ঘটে, এর জন্য সর্বোত্তম মানুষ হলো প্রতিবেশী।

    (২) প্রতিবেশী সকলের চেয়ে অধিক সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়ার দাবী রাখে। কারণ, প্রতিবেশীই তার অতি নিকটে বসবাস করে এবং সে তার যাবতীয় সমস্যা ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে বেশি জানে।

    (৩) যাতে মুসলমানের নিজ জীবন, সন্তান, পরিবার এবং সম্পদের নিরাপত্তা লাভ হয়।

    প্রতিবেশী কারা: যাদের সম্পর্কে কুরআন হাদীসে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে, সেটি নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে আলেমগণের বিভিন্ন মতামত রয়েছে।

    (ক) কেউ বলেছেন, প্রতিবেশীর সীমানা হলো, চতুর দিক দিয়ে চল্লিশ ঘর।

    (খ) কেউ বলেন, যে তোমার সাথে ফজর পড়ল সে তোমার প্রতিবেশী।

    আর এ সমস্ত কথার মনে হয় কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই। সর্বোত্তম এবং সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতামত হচ্ছে, প্রতিবেশী সে-ই, তার বাড়ির কাছাকাছি যার বাড়ি এবং যার বাড়ির সাথে তার বাড়ি মেলানো। সীমানা নির্ধারিত হবে প্রচলিত ধারা অনুযায়ী, যে ব্যক্তি মানুষের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী প্রতিবেশী, সেই মূলতঃ প্রতিবেশী। আর এটা এ জন্য যে, শরী‘আত যে সমস্ত নামের উল্লে­খ করেছে এবং তার অর্থ নির্ধারণ করে দেয় নি, তার অর্থ জানার জন্য সঠিক প্রচলিত রীতির দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হয়।

    প্রতিবেশীর গুরুত্বের ভিন্নতা আসবে নিকটবর্তী এবং দূরবর্তী প্রতিবেশী হওয়ার দিক বিবেচনায়। নিকটবর্তী প্রতিবেশী কল্যাণ এবং সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে দূরবর্তী প্রতিবেশীর চেয়ে অধিক গুরুত্ব পাবে, এর প্রমাণ হলো: ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট প্রশ্ন করেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ!

    «إِنَّ لِي جَارَيْنِ فَإِلَى أَيِّهِمَا أُهْدِي؟ قَالَ: إِلَى أَقْرَبِهِمَا مِنْكِ بَابًا»

    “আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে। তাদের মধ্য থেকে কাকে আমি উপঢৌকন দিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমার দরজার অধিক নিকটবর্তী জনকে’।”[2]

    তাদের শ্রেণি ও মর্যাদার বিভিন্নতার কারণেও গুরুত্বে ভিন্নতা আসবে:

    (১) এক ধরনের প্রতিবেশী আছে যার অধিকার হচ্ছে তিনটি। তিনি হলেন নিকটাত্মীয় মুসলিম প্রতিবেশী। তার অধিকার তিনটি হচ্ছে: আত্মীয়তা, ইসলাম ও প্রতিবেশিত্ব।

    (২) আরেক প্রকার প্রতিবেশী যার অধিকার দু‘টি। তিনি হলেন অনাত্মীয় মুসলিম প্রতিবেশী, তার অধিকার দু’টি হচ্ছে: প্রতিবেশিত্ব ও ইসলাম।

    (৩) আর এক ধরনের প্রতিবেশী, যার অধিকার মাত্র একটি। তিনি হলেন অমুসলিম প্রতিবেশী, তার অধিকার শুধু প্রতিবেশিত্বের।

    প্রতিবেশী নির্বাচনের গুরুত্ব:

    একজন ‍মুসলিমের কর্তব্য হলো সব সময় সৎ প্রতিবেশী বেছে নেওয়ার দিকে দৃষ্টি দিবে, যে তার অধিকারগুলো আদায় করবে এবং তাকে কষ্ট দিবে না, তার হিফাযত করবে এবং তাকে সব কাজে সাহায্য করবে। একটি বহুল প্রচলিত প্রবচন হলো,

    «اِخْتَرِ الْجَارَ قَبْلَ الدَّارِ «

    “বাড়ি বানানোর পূর্বে প্রতিবেশী নির্বাচন কর।”

    প্রকৃত পক্ষে এটা একটা সঠিক বক্তব্য। এর পক্ষে পবিত্র কুরআনের ঐ আয়াত পেশ করা যেতে পারে যেখানে আল্লাহ তা‘আলা ফির‘আউনের স্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন,

    ﴿ رَبِّ ٱبۡنِ لِي عِندَكَ بَيۡتٗا فِي ٱلۡجَنَّةِ ﴾ [التحريم: ١١]

    “হে আমার রব, আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করুন।” [সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ১১]

    সঠিক প্রতিবেশী নির্বাচন করার গুরুত্ব একথা জানা থাকার মাধ্যমেও স্পষ্ট হয় যে, প্রতিবেশী তার প্রতিবেশী এবং সন্তানদের মাঝে প্রভাব বিস্তার করে, পরস্পর মেলা-মেশার কারণে, সে যদি সৎ হয়, তা হলে প্রতিবেশী তার ঘর এবং পরিবারের ব্যাপারে নিরাপদ হয়ে যায়। আর যদি অসৎ হয়, তাহলে সে নিরাপদ হতে পারে না।

    ভালো প্রতিবেশী তার প্রতিবেশীর গোপন বিষয় অবহিত হলে গোপন রাখে। অসৎ প্রতিবেশী বরং সেটিকে প্রকাশ এবং প্রচার করে বেড়ায়। ভালো প্রতিবেশী ভালো কাজে সাহায্য করে, তাকে সৎ উপদেশ দেয়। অসৎ প্রতিবেশী ধোঁকা দিয়ে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে।

    প্রতিবেশীর অধিকারসমূহ:

    প্রতিবেশীর অনেক অধিকার রয়েছে তার মধ্য থেকে নিম্নে কিছু উল্লে­খ করা হলো।

    (১) তাকে কষ্ট না দেওয়া:

    হোক সে কষ্ট কথার মাধ্যমে। যেমন, অভিশাপ দেওয়া, গালি দেওয়া, তার গীবত করা, এমন কিছু তার সম্পর্কে বলা যার দ্বারা সে কষ্ট পায় ইত্যাদি।

    অথবা কাজের মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া। যেমন, তার বাড়ির সামনে আবর্জনা ফেলা, তাকে বিরক্ত করা, ছেলে মেয়েদেরকে তার ঘরের জিনিস নষ্ট করতে উদ্বুদ্ধ করা বা বাধা না দেওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «وَاللَّهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللَّهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللَّهِ لاَ يُؤْمِنُ» قِيلَ: وَمَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «الَّذِي لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَايِقَهُ»

    “আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, বলা হলো কে সে, হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তি যার কষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।”[3]

    নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,

    «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ»

    “সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যার প্রতিবেশী তার কষ্ট থেকে মুক্ত নয়।”[4]

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেছেন,

    «مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلاَ يُؤْذِ جَارَهُ»

    “যে আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেনো প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।”[5]

    প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার সবচেয়ে কঠিন প্রকার হলো: তার সম্মান-সম্ভ্রম-এ আঘাত আসে এমন বিষয়ে কষ্ট দেওয়া। যেমন, প্রতিবেশীর স্ত্রীর বিষয়ে বা তার পর্দা করার ক্ষেত্রে খিয়ানত করা; দৃষ্টি দেওয়ার মাধ্যমে হোক বা সরাসরি কথা বলার মাধ্যমে অথবা অসৎ উদ্দেশ্যে ফোনে কথা বলার মাধ্যমে অথবা যে কোনো অশ্লীল কাজের মাধ্যমে। আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো,

    «أَيُّ الذَّنْبِ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ»؟ قَالَ: «أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ» قُلْتُ: إِنَّ ذَلِكَ لَعَظِيمٌ، قُلْتُ: ثُمَّ أَيُّ؟ قَالَ: «وَأَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ تَخَافُ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ» . قُلْتُ: ثُمَّ أَيُّ؟ قَالَ: «أَنْ تُزَانِيَ حَلِيلَةَ جَارِكَ»

    “আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি ? তিনি বললেন, কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ নির্ধারণ করা অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম তার পরে কি? বললে­ন, তুমি তোমার সন্তানকে হত্যা করা তোমার সাথে খাওয়ার ভয়ে। আমি বললা­ম এর পর কি? তিনি বললে­ন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে সম্মতির ভিত্তিতে ব্যভিচার করা।”[6]

    অর্থাৎ তার প্রতিবেশীর স্ত্রীকে ফুসলিয়ে তাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে তার সাথে ব্যভিচার করা। কারো অসম্মতিতে জোরপূর্বক তার সাথে ব্যভিচার করা থেকে এটা আরো বেশি অপরাধ।

    মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «لَأَنْ يَزْنِي الرَّجُلُ بِعَشْرِ نِسْوَةٍ أَيْسَرُ عَلَيْهِ مِنْ أَنْ يَزْنِي بِامْرَأَةِ جَارِهِ»

    “কোনো ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করা দশজন মহিলার সাথে ব্যভিচার করা থেকেও কঠিন পাপ।”[7]

    প্রতিবেশীর এ বিষয়টি বড় করে দেখার কারণ:

    (ক) এক প্রতিবেশী অপর প্রতিবেশীর নিকট আমানতস্বরূপ, এর সাথে ব্যভিচার করা উক্ত আমানতের খিয়ানত।

    (খ) প্রতিবেশী অপর প্রতিবেশীর যাবতীয় অবস্থা এবং তার উপস্থিতি-অনুপস্থিতির সময় সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত; কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা।

    (গ) সে যেহেতু তার নিকটেই থাকে এবং তার সাথে উঠা-বসা করে তাই তার কষ্ট প্রতিবেশীর নিকট খুব দ্রুত এবং সহজেই পৌঁছে।

    (ঘ) আরেকটি কারণ হচ্ছে কেউ তাকে সন্দেহ করবে না।

    (২) প্রতিবেশীর প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ করা:

    নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ»

    “যে আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে।”[8]

    আর এটি ব্যাপক ভিত্তিক অধিকার, এর সাথে অনেকগুলো অধিকার এবং বিষয় জড়িত। যথা:

    (ক) তার প্রয়োজনে সাহায্য করা, ব্যবহারের জিনিস চাইলে দেওয়া। কেননা প্রতিবেশী কখনো প্রতিবেশীর কাছে মুখাপেক্ষী নয় এমন হতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা ঐ সমস্ত লোকদের নিন্দা করেছেন যারা নিত্য ব্যবহার্য জিনিস চাইলে বিমুখ করে। তাদের নিন্দা করে আল্লাহ বলেন,

    ﴿ وَيَمۡنَعُونَ ٱلۡمَاعُونَ ٧ ﴾ [الماعون: ٧]

    “তারা নিত্য ব্যবহার্য জিনিস অন্যকে দেয় না।” [সূরা আল-মা‘ঊন, আয়াত: ৭]

    (খ) প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেওয়া ও তার বাড়িতে খাবার ইত্যাদি প্রেরণ করা।

    আবূ যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অসীয়ত করে বলেন,

    «إِذَا طَبَخْتَ مَرَقًا فَأَكْثِرْ مَاءَهُ، ثُمَّ انْظُرْ أَهْلَ بَيْتٍ مِنْ جِيرَانِكَ، فَأَصِبْهُمْ مِنْهَا بِمَعْرُوفٍ»

    “যখন তুমি তরকারী রান্না করবে তাতে বেশি করে পানি দেবে অতঃপর তোমার প্রতিবেশীর খবর নিয়ে তার থেকে তাদেরকে কিছু দিবে।”[9]

    (গ) প্রতিবেশী ঋণ চাইলে তাকে ঋণ দেওয়া, তার প্রয়োজনে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করে তার রক্ষণাবেক্ষণ করা।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «لَيْسَ الْمُؤْمِنُ الَّذِي يَشْبَعُ، وَجَارُهُ جَائِعٌ إِلَى جَنْبِهِ»

    “সে মুমিন নয় যে পেট ভরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে।”[10]

    (ঘ) প্রতিবেশীর ভালো কোনো সংবাদ পেলে তাকে মোবারকবাদ জানানো এবং খুশি প্রকাশ করা, বিবাহ করলে অথবা সন্তান জন্ম নিলে, অথবা তার সন্তান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে এবং এ জাতীয় উপলক্ষে তাকে মোবারকবাদ জানানো এবং বরকতের দো‘আ করা।

    (৩) মুসলিমদের মাঝে পরস্পরে যে অধিকারগুলো আছে সেগুলো প্রতিবেশীর ব্যাপারে আদায় করবে। কেননা সে-ই এর অধিকার বেশি রাখে। যেমন, তাকে সালাম দেওয়া, সালামের উত্তর দেওয়া, অসুস্থ হলে তার সেবা-শুশ্রূষা করা, তার দাওয়াত গ্রহণ করা, তার সাথে সাক্ষাৎ হলে আল্লাহর প্রদত্ব ফরযগুলো সংক্ষেপে স্মরণ করিয়ে দেওয়া ইত্যাদি।

    সমাপ্ত

    [1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০১৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬২৪

    [2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৫৯, ২৫৯৫, ৬০২০।

    [3] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০১৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৬।

    [4] মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ৮৮৫৫।

    [5] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০১৮, ৬১৩৬, ৬৪৭৫; সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৫১৫৪।

    [6] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৬।

    [7] মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ২২৭৩৪।

    [8] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০১৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৭।

    [9] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬২৫।

    [10] আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং ১১২।